সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা

আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিককে মারধোরের ঘটনায় উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন তুহিন ও তাঁর দুই ভাজিতাসহ ৫জন এবং অজ্ঞাত ২০-৩০ জনের নামে থানায় মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে হামলা ও মারধরের শিকার হওয়া স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
আহত সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ দৈনিক কালবেলা নাসিরনগর উপজেলা প্রতিনিধি এবং এনটিভি অনলাইন ব্রাহ্মণবাড়িয়া (সরাইল-নাসিরনগর) প্রতিনিধি মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ১২টা এক মিনিটে আন্তজার্তিক ভাষা দিবস উপলক্ষে শহিদ মিনারে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
এ সময় শহীদ মিনারে উপস্থিত ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা জাতীয় নাগরিক কমিটির দুইজনকে নিষিদ্ধ সংঘঠনন ছাত্রলীগ বলে পেটাতে থাকে। ঘটনাটি মুঠোফোনে ধারণ করতে গেলে বশির উদ্দিন তুহিন ও তাঁর সমর্থকেরা ঐ সাংবাদিকের দিকে তেড়ে আসে। এ সময় বশির ঐ সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়ে প্রথমে রড দিয়ে আঘাত করেন। এতে পরে তার ভাতিজারা সহ তার কর্মীরা রড চাপাতিসহ উপর্যুপরি আক্রমণ করে। এতে মারধরে মাহমুদের মুখ, চোখ, মাথা, ঘারসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়েছে। পরে স্থানীয় কর্মরত সাংবাদিক ও লোকজন তাকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করেন।
এ ঘটনায় গত শনিবার ওই সাংবাদিক বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন তুহিন ও তাঁর দুই ভাজিতাসহ ৫জন এবং অজ্ঞাত ২০-৩০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
হামলার শিকার সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, নাসিরনগর প্রেস ক্লাবের সাথে শহীদমিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানাতে গিয়েছিলাম। সেখানে জাতীয় নাগরিক কমিটির দুজনকে ছাত্রলীগ বলে পেটানো হচ্ছিল। পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে আমি সেখানে ফুটেজ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দৌঁড়ে এসে আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে আমার উপর হামলা ধাঁরালো লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। পরে তার ভাতিজারা সহ বশিরের দ্লীয় অনুসারীরা রড, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে।
নাসিরনগরের স্থানীয় সাংবাদিক মো. আজিজুর রহমান বলেন, পেশাগত দায়িত্বপালনকালে একজন সাংবাদিককে মারধোর করার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। পাশা-পাশি যারা এঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে তাদেরকে দ্রæত গ্রেপ্তারের দাবী করছি।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ইসলাম বলেন, আহত সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাদী হয়ে বশির উদ্দিন তুহিন ও তাঁর দুই ভাজিতাসহ ৫জন এবং অজ্ঞাত ২০-৩০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে এবং আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অভিযুক্ত নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন তুহিন কে গতকাল রোববারও (০১৮২০০০৭৫২৩) এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
গত শনিবার যুগান্তর পত্রিকার ৬ পৃষ্ঠায় শহিদ মিনারে ছাত্রলীগকে মারধোর ভিডিও ধারণ নাসিরনগরে সাংবাদিককে বিএনপি নেতার মারধর শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
বাখ//আর