০২:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজার শাসনভার ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত হামাসের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গাজা পুনর্গঠনে মিশরের দেওয়া বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করেছে আরব দেশগুলো। গতকাল মঙ্গলবার কায়রোতে অনুষ্ঠিত জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা পুনর্গঠনে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাবের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করে মিশর। গতকাল কায়রো সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, গাজা পুনর্গঠনের বিকল্প প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাবে ছিল, গাজার বাসিন্দাদের মিশর ও জর্ডানে পাঠিয়ে গাজায় উপকূলীয় পর্যটন শহর গড়ে তোলা হবে। তাঁর এই প্রস্তাবে আরব দেশগুলো আপত্তি জানায় এবং বিকল্প একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে কায়রোতে মিলিত হয়।

কয়রো সম্মেলনে মিশরের দেওয়া প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গাজা পুনর্গঠনে ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে। এ জন্য গাজার বাসিন্দাদের মোটেই বাস্তুচ্যুত করার প্রয়োজন হবে না।

মিশরের প্রেসিডেন্ট সিসি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজা সংঘাত বন্ধ করে সেখানে শান্তি ফেরাতে পারবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এই অযাচিত সংঘাত গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা এখন কারা শাসন করবে, সেটিই বড় প্রশ্ন। আর গাজা পুনর্গঠনে যে শত শত কোটি টাকা প্রয়োজন, সেটির জোগান দেবে কোন কোন দেশ।

প্রেসিডেন্ট সিসি বলেন, স্বতন্ত্র ও পেশাদার টেকনোক্র্যাটদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন নিয়ে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তিনি কাজ করছেন। এই কমিটিই গাজায় প্রশাসন পরিচালনা করবে।

এ ছাড়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সাময়িক সময়ের জন্য মানবিক সহায়তা তদারক এবং উপত্যকাটির বিভিন্ন বিষয় দেখভাল করবে এই কমিটি।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কমিটি নিয়ে কথা বলেন মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি। তিনি জানান, ছয় মাসের জন্য গাজার প্রশাসন পরিচালনায় গঠিত এই কমিটির প্রধান যিনি হবেন, তাঁকে মনোনীত করা হয়েছে। তবে এখনই তাঁর নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।

এদিকে আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গেইত বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠনে মিশরের প্রস্তাবটিতে আরব দেশগুলো পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে।’

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও মিশরের দেওয়া প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত না করে উপত্যকাটিকে পুনর্গঠনের এমন একটি প্রস্তাব দিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও আহ্বান জানান।

মিশরের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসও। সংগঠনটি বলেছে, ‘ফিলিস্তিনের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার পদক্ষেপকে আমরা সমর্থন জানাই এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানাই।’

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে কার্যত গাজার শাসনভার ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিল হামাস।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০১:৩৩:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
৭৭ জন দেখেছেন

গাজার শাসনভার ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত হামাসের

আপডেট : ০১:৩৩:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

গাজা পুনর্গঠনে মিশরের দেওয়া বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করেছে আরব দেশগুলো। গতকাল মঙ্গলবার কায়রোতে অনুষ্ঠিত জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা পুনর্গঠনে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাবের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করে মিশর। গতকাল কায়রো সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, গাজা পুনর্গঠনের বিকল্প প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাবে ছিল, গাজার বাসিন্দাদের মিশর ও জর্ডানে পাঠিয়ে গাজায় উপকূলীয় পর্যটন শহর গড়ে তোলা হবে। তাঁর এই প্রস্তাবে আরব দেশগুলো আপত্তি জানায় এবং বিকল্প একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে কায়রোতে মিলিত হয়।

কয়রো সম্মেলনে মিশরের দেওয়া প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গাজা পুনর্গঠনে ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে। এ জন্য গাজার বাসিন্দাদের মোটেই বাস্তুচ্যুত করার প্রয়োজন হবে না।

মিশরের প্রেসিডেন্ট সিসি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজা সংঘাত বন্ধ করে সেখানে শান্তি ফেরাতে পারবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এই অযাচিত সংঘাত গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা এখন কারা শাসন করবে, সেটিই বড় প্রশ্ন। আর গাজা পুনর্গঠনে যে শত শত কোটি টাকা প্রয়োজন, সেটির জোগান দেবে কোন কোন দেশ।

প্রেসিডেন্ট সিসি বলেন, স্বতন্ত্র ও পেশাদার টেকনোক্র্যাটদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন নিয়ে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তিনি কাজ করছেন। এই কমিটিই গাজায় প্রশাসন পরিচালনা করবে।

এ ছাড়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সাময়িক সময়ের জন্য মানবিক সহায়তা তদারক এবং উপত্যকাটির বিভিন্ন বিষয় দেখভাল করবে এই কমিটি।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কমিটি নিয়ে কথা বলেন মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি। তিনি জানান, ছয় মাসের জন্য গাজার প্রশাসন পরিচালনায় গঠিত এই কমিটির প্রধান যিনি হবেন, তাঁকে মনোনীত করা হয়েছে। তবে এখনই তাঁর নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।

এদিকে আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গেইত বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠনে মিশরের প্রস্তাবটিতে আরব দেশগুলো পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে।’

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও মিশরের দেওয়া প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত না করে উপত্যকাটিকে পুনর্গঠনের এমন একটি প্রস্তাব দিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও আহ্বান জানান।

মিশরের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসও। সংগঠনটি বলেছে, ‘ফিলিস্তিনের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার পদক্ষেপকে আমরা সমর্থন জানাই এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানাই।’

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে কার্যত গাজার শাসনভার ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিল হামাস।