০২:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যমুনার বিস্তীর্ণ চরে রাঙাচ্ছে লাল মরিচ, বাম্পার ফলনেও হতাশ কৃষকরা

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনার বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলে নতুন পলি মাটিতে চাষ হয়েছে লাল সোনা খ্যাত মরিচের। এখন চরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ ক্ষেত রাঙাচ্ছে লাল মরিচ। এই মৌসুমে চরাঞ্চলগুলোতে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে কাঁচা মরিচের কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় হতাশ মরিচ চাষীরা। গেলো বছর মরিচ চাষে লাভের মুখ দেখলেও চলতি বছর লোকসানের শঙ্কায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তপ্ত রৌদে মরিচ শুকাচ্ছেন চাষীরা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইসলামপুর উপজেলার যমুনা, ব্রহ্মপুত্র নদী বেষ্টিত কুলকান্দি, সাপধরী, চিনাডুলী, বেলগাছা, গোয়ালেরচর, চরগোয়ালিনী, চরপুটিমারি, গাইবান্ধা ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে মরিচের চাষ হয়েছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের ফলনও হয়েছে বাম্পার। চলতি বছর মরিচের ফলন ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। চলতি মৌসুমে কাঁচা মরিচের বাজার দর কম থাকায় লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠনো নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। যমুনার বিস্তৃর্ণ চরে উৎপাদিত কাঁচা মরিচ ও শুকনো মরিচ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রয় করতে আসেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি সপ্তাহে ইসলামপুরের উলিয়া ও গুঠাইল বাজারে বসে মরিচের হাট। এই হাট থেকে ব্যাপারীরা মরিচ ক্রয় করে চরের তপ্ত বালুর ওপর শুকিয়ে নিয়ে যান রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে।

কৃষকরা জানান, এবার মরিচের ফলন অনেক ভালো। তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় মরিচ গাছ মরেনি। এছাড়া এবার রোগবালাই ও পোকা মাকড়ও আক্রমণ করেনি। কৃষি অফিসের পরামর্শে রোগবালাই দমনের জন্য সব ধরনের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফলন ভালো হলেও বাজারে মরিচের দাম নেই। গুঠাইল হাটের মরিচ ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, এ বছর মরিচ চাষীদের মাথায় হাত। বাজারে মরিচের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কম দামে ক্রয় করতে পারছি।

মরিচ চাষী সোলায়মান হোসেন জানান, এ বছর কাঁচা মরিচ প্রাইকারি ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি এবং খুচরা ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। সেই টাকা মরিচ তোলা শ্রমিক দের দিতেই শেষ। সেজন্য কাঁচা মরিচ বিক্রি না করে শুকনো মরিচ বিক্রি করতে তপ্ত বালুতে শুকাচ্ছি। লাভবান হওয়ার আশায় আমার মত অনেকেই মরিচ শুকাতে তপ্ত রৌদে দিন পার করছে।

ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএলএম রেজুয়ান বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে দাম নিয়ে হতাশ কৃষকরা। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি। আমাদের পরামর্শ নিয়ে দেশি বালিঝুড়ি সহ বিভিন্ন হাইব্রিড প্রজাতীর মরিচ চাষ করে বাম্পার ফলন পাচ্ছে চাষীরা। এ বছর ইসলামপুর উপজেলায় ৩ হাজার ৫শ ২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।

বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১০:০১:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
৭৮ জন দেখেছেন

যমুনার বিস্তীর্ণ চরে রাঙাচ্ছে লাল মরিচ, বাম্পার ফলনেও হতাশ কৃষকরা

আপডেট : ১০:০১:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনার বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলে নতুন পলি মাটিতে চাষ হয়েছে লাল সোনা খ্যাত মরিচের। এখন চরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ ক্ষেত রাঙাচ্ছে লাল মরিচ। এই মৌসুমে চরাঞ্চলগুলোতে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে কাঁচা মরিচের কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় হতাশ মরিচ চাষীরা। গেলো বছর মরিচ চাষে লাভের মুখ দেখলেও চলতি বছর লোকসানের শঙ্কায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তপ্ত রৌদে মরিচ শুকাচ্ছেন চাষীরা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইসলামপুর উপজেলার যমুনা, ব্রহ্মপুত্র নদী বেষ্টিত কুলকান্দি, সাপধরী, চিনাডুলী, বেলগাছা, গোয়ালেরচর, চরগোয়ালিনী, চরপুটিমারি, গাইবান্ধা ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে মরিচের চাষ হয়েছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের ফলনও হয়েছে বাম্পার। চলতি বছর মরিচের ফলন ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। চলতি মৌসুমে কাঁচা মরিচের বাজার দর কম থাকায় লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠনো নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। যমুনার বিস্তৃর্ণ চরে উৎপাদিত কাঁচা মরিচ ও শুকনো মরিচ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রয় করতে আসেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি সপ্তাহে ইসলামপুরের উলিয়া ও গুঠাইল বাজারে বসে মরিচের হাট। এই হাট থেকে ব্যাপারীরা মরিচ ক্রয় করে চরের তপ্ত বালুর ওপর শুকিয়ে নিয়ে যান রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে।

কৃষকরা জানান, এবার মরিচের ফলন অনেক ভালো। তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় মরিচ গাছ মরেনি। এছাড়া এবার রোগবালাই ও পোকা মাকড়ও আক্রমণ করেনি। কৃষি অফিসের পরামর্শে রোগবালাই দমনের জন্য সব ধরনের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ফলন ভালো হলেও বাজারে মরিচের দাম নেই। গুঠাইল হাটের মরিচ ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, এ বছর মরিচ চাষীদের মাথায় হাত। বাজারে মরিচের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কম দামে ক্রয় করতে পারছি।

মরিচ চাষী সোলায়মান হোসেন জানান, এ বছর কাঁচা মরিচ প্রাইকারি ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি এবং খুচরা ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। সেই টাকা মরিচ তোলা শ্রমিক দের দিতেই শেষ। সেজন্য কাঁচা মরিচ বিক্রি না করে শুকনো মরিচ বিক্রি করতে তপ্ত বালুতে শুকাচ্ছি। লাভবান হওয়ার আশায় আমার মত অনেকেই মরিচ শুকাতে তপ্ত রৌদে দিন পার করছে।

ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএলএম রেজুয়ান বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে দাম নিয়ে হতাশ কৃষকরা। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি। আমাদের পরামর্শ নিয়ে দেশি বালিঝুড়ি সহ বিভিন্ন হাইব্রিড প্রজাতীর মরিচ চাষ করে বাম্পার ফলন পাচ্ছে চাষীরা। এ বছর ইসলামপুর উপজেলায় ৩ হাজার ৫শ ২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।

বাখ//আর