০১:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাদা বলের ক্রিকেটে মুশির ৯ শতক, ৪৯ অর্ধশতক এখন স্মৃতি

স্পোর্টস ডেস্ক

টি-টোয়েন্টির পর এবার ওয়ানডে ক্রিকেটকেও বিদায় বললেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। অনেকটা নীরবে নিভৃতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে সাদা বলের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন অভিজ্ঞ এই টাইগার ব্যাটার। এক দিনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে নয়টি সেঞ্চুরি ও ৪৯টি অর্ধশত রানের ইনিংস রয়েছে মিস্টার ডিপেন্ডেবলের। ওয়ানডেতে রান করেছেন প্রায় আট হাজার।

একটা ছোট্ট কিন্তু গভীর চিরকুটে সাদা বলের ক্রিকেটের পরিসমাপ্তি।

২০০৬ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক। এরপর দীর্ঘ ১৮ বছর রঙিন পোশাকে দেশের ক্রিকেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন মুশফিকুর রহিম। শুরুতেই অবশ্য সেরা হননি, সময় নিয়েছেন ঢের । তবে একটু একটু করে প্রতিভার জানান দিয়েছেন। কখনও গ্লাভস হাতে, কখনও আবার ব্যাট হাতে। সময়ের পরিক্রমায় বাংলার ক্রিকেটে খ্যাতি পেয়েছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল হিসেবে।

২০০৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো হাফসেঞ্চুরি করে প্রথম বিশ্ব ক্রিকেটে আলো কাড়েন নিজের দিকে। তারপর ক্রমান্বয়ে বড় বড় দলগুলোর সাথে হোম ও অ্যাওয়ে সিরিজে পারফর্ম করে জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেছেন। ব্যাট হাতে লিখেছেন অনেক জয়ের গল্প। রচনা করেছেন ইতিহাস।

এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে প্রায় হেরে বসা ম্যাচ জিতিয়েছেন। ইরফান পাঠান কিংবা প্রভিন কুমারদের বলে একের পর এক সীমানা ছাড়া করা বাউন্ডারিগুলো মনে আছে নিশ্চয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। খাদের কিনারা থেকে অসংখ্যবার দলকে বাঁচিয়েছেন। অবসরের পর মুশফিকের সাথে সাথে ক্রিকেটপ্রেমীরাও নিশ্চয় পুরোনো ইনিংসগুলো দেখে স্মৃতিকাতর হবেন।

প্রায় দুই দশকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২৭৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক। যেখানে নয় সেঞ্চুরি আর ৪৯ হাফসেঞ্চুরিতে প্রায় আট হাজার রান করেছেন মুশফিক।

ক্যারিয়ার গড়টা ৮০ ছুঁইছুঁই। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা ক্যারিয়ার বলা যায় অবলীলায়। আক্ষেপ যেটুকুন সেটা সম্ভবত দেশের সকল ক্রিকেটার ও ক্রিকেট ভক্তদের আক্ষেপ। আর সেই আক্ষেপ নাম শিরোপা। বড় কোনো টুর্নামেন্ট না জিতেই বিদায় নেয়াটা হয়ত একটু বেশিই বেদনার।

তবে পৃথিবীর চিরায়ত নিয়মে শুরুর সাথে শেষের সম্পর্ক চিরন্তন। ধীরে ধীরে যেভাবে বিশ্ব ক্রিকেটে মুশফিকের উত্থান হয়েছিল ঠিক সেভাবেই সময় গড়ানোর সাথে সাথে মুশফিকের ক্যারিয়ারে এসেছে পড়ন্ত বেলা। ব্যাট হাতে সবশেষ ইনিংসগুলোতে যেন অলিখিতভাবেই বোঝা যাচ্ছিলো এই টাইগার কিংবদন্তির বিদায় নেয়ার বার্তা।

পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়। মুশির বিদায় বেলায় এই লাইনগুলো আবার হয়তো প্রাণ পাবে মিস্টার ডিপেন্ডবলের ভক্ত অনুরাগীদের মধ্যে। তবে বর্ণাঢ্য কিংবা সমৃদ্ধ বলা না গেলেও মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের যাত্রাটা উঠতি ক্রিকেটারদের জন্য অনকরণীয় হয়ে থাকবে বহুদিন।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১২:২৮:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
৬৭ জন দেখেছেন

সাদা বলের ক্রিকেটে মুশির ৯ শতক, ৪৯ অর্ধশতক এখন স্মৃতি

আপডেট : ১২:২৮:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

টি-টোয়েন্টির পর এবার ওয়ানডে ক্রিকেটকেও বিদায় বললেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। অনেকটা নীরবে নিভৃতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে সাদা বলের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন অভিজ্ঞ এই টাইগার ব্যাটার। এক দিনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে নয়টি সেঞ্চুরি ও ৪৯টি অর্ধশত রানের ইনিংস রয়েছে মিস্টার ডিপেন্ডেবলের। ওয়ানডেতে রান করেছেন প্রায় আট হাজার।

একটা ছোট্ট কিন্তু গভীর চিরকুটে সাদা বলের ক্রিকেটের পরিসমাপ্তি।

২০০৬ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক। এরপর দীর্ঘ ১৮ বছর রঙিন পোশাকে দেশের ক্রিকেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন মুশফিকুর রহিম। শুরুতেই অবশ্য সেরা হননি, সময় নিয়েছেন ঢের । তবে একটু একটু করে প্রতিভার জানান দিয়েছেন। কখনও গ্লাভস হাতে, কখনও আবার ব্যাট হাতে। সময়ের পরিক্রমায় বাংলার ক্রিকেটে খ্যাতি পেয়েছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল হিসেবে।

২০০৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো হাফসেঞ্চুরি করে প্রথম বিশ্ব ক্রিকেটে আলো কাড়েন নিজের দিকে। তারপর ক্রমান্বয়ে বড় বড় দলগুলোর সাথে হোম ও অ্যাওয়ে সিরিজে পারফর্ম করে জাতীয় দলে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেছেন। ব্যাট হাতে লিখেছেন অনেক জয়ের গল্প। রচনা করেছেন ইতিহাস।

এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে প্রায় হেরে বসা ম্যাচ জিতিয়েছেন। ইরফান পাঠান কিংবা প্রভিন কুমারদের বলে একের পর এক সীমানা ছাড়া করা বাউন্ডারিগুলো মনে আছে নিশ্চয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। খাদের কিনারা থেকে অসংখ্যবার দলকে বাঁচিয়েছেন। অবসরের পর মুশফিকের সাথে সাথে ক্রিকেটপ্রেমীরাও নিশ্চয় পুরোনো ইনিংসগুলো দেখে স্মৃতিকাতর হবেন।

প্রায় দুই দশকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২৭৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক। যেখানে নয় সেঞ্চুরি আর ৪৯ হাফসেঞ্চুরিতে প্রায় আট হাজার রান করেছেন মুশফিক।

ক্যারিয়ার গড়টা ৮০ ছুঁইছুঁই। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা ক্যারিয়ার বলা যায় অবলীলায়। আক্ষেপ যেটুকুন সেটা সম্ভবত দেশের সকল ক্রিকেটার ও ক্রিকেট ভক্তদের আক্ষেপ। আর সেই আক্ষেপ নাম শিরোপা। বড় কোনো টুর্নামেন্ট না জিতেই বিদায় নেয়াটা হয়ত একটু বেশিই বেদনার।

তবে পৃথিবীর চিরায়ত নিয়মে শুরুর সাথে শেষের সম্পর্ক চিরন্তন। ধীরে ধীরে যেভাবে বিশ্ব ক্রিকেটে মুশফিকের উত্থান হয়েছিল ঠিক সেভাবেই সময় গড়ানোর সাথে সাথে মুশফিকের ক্যারিয়ারে এসেছে পড়ন্ত বেলা। ব্যাট হাতে সবশেষ ইনিংসগুলোতে যেন অলিখিতভাবেই বোঝা যাচ্ছিলো এই টাইগার কিংবদন্তির বিদায় নেয়ার বার্তা।

পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়। মুশির বিদায় বেলায় এই লাইনগুলো আবার হয়তো প্রাণ পাবে মিস্টার ডিপেন্ডবলের ভক্ত অনুরাগীদের মধ্যে। তবে বর্ণাঢ্য কিংবা সমৃদ্ধ বলা না গেলেও মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের যাত্রাটা উঠতি ক্রিকেটারদের জন্য অনকরণীয় হয়ে থাকবে বহুদিন।