প্লট দুর্নীতি: শেখ হাসিনা-রেহানাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযোগপত্র দিয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে এই চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
এ মামলায় শেখ হাসিনা পরিবার ছাড়াও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৮টি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
আজ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে চার্জশিট অনুমোদন করা হয় এবং অভিযোগপত্রগুলো আদালতে দাখিল করার প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের হয়েছিল। চার্জশিটে নতুন করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিনকে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, শেখ রেহানার মেয়ে রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক।
এদিকে, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা রাজউক-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে এই বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনসহ আরও অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা রয়েছেন।
অভিযোগের মধ্যে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপান্তির নামে প্লট বরাদ্দ করা হয়েছে।
এছাড়া, দুদক গত ২৭ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে পূর্বাচল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর গত ২২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন ডলার (৩০ হাজার কোটি টাকা) বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় দুদক।
তবে, এসব অভিযোগ এখনও অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে এবং তদন্ত চলমান রয়েছে।