নতুন ৮ বিষয়ে সংস্কার ভাবনা তুলে ধরলেন তারেক রহমান

ভোট, রাজনীতি, সংস্কার নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর আগামীতে ক্ষমতায় গেলে কিভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমিয়ে জনগণের দুর্ভোগ কমানো হবে, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে সে বিষয়ে প্রস্তাবনা তুলে ধরা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ নতুন করে ৮ বিষয়ে নিজের সংস্কার ভাবনা তুলে ধরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন–এনডিএমের ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি একথা বলেন।
মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিশিষ্ট জনদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এনডিএম। সেখানে যোগ দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ও দেশের পেশাজীবী ও বিশিষ্ট জনেরা। প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আগামী দিনের রাষ্ট্র নির্মাণে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত আরও কিছু বিষয় নিয়ে তর্ক বিতর্ক করা, এসব নিয়ে নিজ দলের প্রস্তাবনা তুলে ধরা।
তারেক রহমান বলেন, দেশের মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় ভোগান্তিতে আছে। আগামীতে ক্ষমতায় গেলে কিভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমিয়ে জনগণের দুর্ভোগ কমানো হবে, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে সে বিষয়ে প্রস্তাবনা তুলে ধরা উচিত।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, পাশাপাশি আরও যেসব জনদুর্ভোগের বিষয় আছে সেগুলো নিয়েও আলোচনা করা উচিত রাজনৈতিক দলগুলোর।
৮ সংস্কার ভাবনা
১. তারেক রহমান বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে যন্ত্রণায় আছে এ দেশের মানুষ। আমরা কেন রাজনৈতিক দলগুলো এগুলো নিয়ে ডিবেট করছি না যে, জনগণের রায় আমার পক্ষে আসলে আমি কীভাবে এগুলো নিয়ে ডিল করবো। কীভাবে এগুলো মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখবো। উৎপাদন বাড়াবো। এগুলো নিয়ে কেন আলাপ করছি না? আমি মনে করি, আমার যে পূর্ব অভিজ্ঞতা; এই বিষয়গুলো আমাদের জাতির সামনে তুলে ধরা উচিত। আমি মনে করি, উৎপাদন ব্যবস্থা, বাজার ব্যবস্থা এগুলো নিয়ে প্রস্তাবনা থাকা উচিত। ডিবেট হওয়া উচিত।’
২. তিনি বলেন, ‘আমাদের ২০ কোটি মানুষের মিনিমাম চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো- সেই সংস্কার নিয়েও কথা বলা দরকার।’
৩. তারেক রহমান বলেন, ‘সংস্কারের আরেকটি বিষয় আছে। আমারা যদি সঠিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে দেশকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব? তাই আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে কীভাবে দেখতে চাই-এটার একটা সংস্কার প্রস্তাব থাকতে হবে।’
৪. তিনি বলেন, ‘আরকেটা সংস্কার হলো- উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমাদের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে। কীভাবে আমরা উৎপাদন বাড়াবো সেই বিষয়ের সংস্কার নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।’
৫. তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের শিল্পের বিষয়েও চিন্তা করতে হবে। কীভাবে শিল্প গড়ে তোলা যায়। এটাও সংস্কার। শ্রমিকদের কীভাবে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়েও ভাবতে হবে।’
৬. বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘পরিবেশ দূষণে ঢাকাসহ সারাদেশের নানা জায়গা বিপর্যস্ত। দূষণ কমানোও সংস্কারের বড় অংশ। এই দূষণের কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কীভাবে আমরা দূষণ থেকে সবাইকে রক্ষা করতে পারি, কীভাবে দূষণ থেকে জাতিকে রক্ষা করতে পারি; সেটাও সংস্কারের বড় অংশ।’
৭. তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত বড় সংস্কার প্রস্তাব হলো, আমাদের ২০ কোটি মানুষের ব্যবহার্য পানি কি পিয়র? আমরা কি পিয়র পানি সরবরাহ করতে পারছি। কীভাবে আমরা এই ২০ কোটি কোটি মানুষের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারি, সেটা কী সংস্কার প্রস্তাব নয়।’
৮. জ্বালানির চাহিদা কীভাবে পূরণ করতে পারি তাও সংস্করের অংশ বলে মনে করেন তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা বাস্তবধর্মী সমালোচনা আবশ্যই করতে পারি, কিন্তু এগুলো যদি আমরা অ্যাড্রেস করতে ভুলে যায়, তাহলে এই দেশের সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের কারও সেটি চাওয়া নয়।’