০২:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিচারে বাংলাদেশের সহায়তা চাই গাম্বিয়া

অনলাইন ডেস্ক

গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু ট্যাঙ্গারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তাদের মধ্যে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টাকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি বলেন, গাম্বিয়া এই মামলাটি দায়ের করেছিল এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এটি চালিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে চরমভাবে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য।

মামাদু ট্যাঙ্গারা বলেন,‘আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে পারি যে, গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন এবং এটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। আমরা বিষয়টিকে আবারও বিশ্ব মানচিত্রে ফিরিয়ে আনতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং জনগণ এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের পক্ষে গাম্বিয়ার পদক্ষেপ এবং এই মামলার সফল পরিণতির জন্য আফ্রিকান দেশটির অব্যাহত প্রতিশ্রুতি ও প্রচেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চাই এ মামলা সফল হোক। আমরা আপনাদের সমর্থন চাই। এটি আমাদের জন্য বড় ধরনের সহায়তা।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু ট্যাঙ্গারা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘তাঁর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রোহিঙ্গাদের জন্য সম্মানজনক জীবনের পথ প্রশস্ত করবে।’

তিনি বলেন, ‘আপনি গাম্বিয়ায় সুপরিচিত। আপনার উপস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সর্বদা আপনার পাশে থাকবে।’

গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার নতুন দায়িত্বের সফলতা কামনা করেন এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে তার চ্যালেঞ্জিং মিশনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য সংগ্রহে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন এবং রাখাইনে মানবিক সহায়তা, খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে আরও মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য না হয়।

প্রধান উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও গভীর করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আপনাদের কীভাবে আমরা সাহায্য করতে পারি, আমাদের জানান’।

উভয় নেতা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যৌথভাবে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তাঁরা আফ্রিকায় দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ক্ষুদ্রঋণের সম্ভাবনা এবং সহিংসতা-কবলিত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা করেন।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সঙ্কট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৮:১৪:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
৭২ জন দেখেছেন

রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিচারে বাংলাদেশের সহায়তা চাই গাম্বিয়া

আপডেট : ০৮:১৪:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু ট্যাঙ্গারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তাদের মধ্যে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টাকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি বলেন, গাম্বিয়া এই মামলাটি দায়ের করেছিল এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এটি চালিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে চরমভাবে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য।

মামাদু ট্যাঙ্গারা বলেন,‘আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে পারি যে, গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন এবং এটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। আমরা বিষয়টিকে আবারও বিশ্ব মানচিত্রে ফিরিয়ে আনতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং জনগণ এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের পক্ষে গাম্বিয়ার পদক্ষেপ এবং এই মামলার সফল পরিণতির জন্য আফ্রিকান দেশটির অব্যাহত প্রতিশ্রুতি ও প্রচেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চাই এ মামলা সফল হোক। আমরা আপনাদের সমর্থন চাই। এটি আমাদের জন্য বড় ধরনের সহায়তা।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু ট্যাঙ্গারা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘তাঁর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রোহিঙ্গাদের জন্য সম্মানজনক জীবনের পথ প্রশস্ত করবে।’

তিনি বলেন, ‘আপনি গাম্বিয়ায় সুপরিচিত। আপনার উপস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সর্বদা আপনার পাশে থাকবে।’

গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার নতুন দায়িত্বের সফলতা কামনা করেন এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে তার চ্যালেঞ্জিং মিশনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য সংগ্রহে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন এবং রাখাইনে মানবিক সহায়তা, খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে আরও মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য না হয়।

প্রধান উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও গভীর করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আপনাদের কীভাবে আমরা সাহায্য করতে পারি, আমাদের জানান’।

উভয় নেতা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যৌথভাবে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তাঁরা আফ্রিকায় দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ক্ষুদ্রঋণের সম্ভাবনা এবং সহিংসতা-কবলিত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা করেন।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সঙ্কট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস