০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এমন লজ্জা আগে কখনো পাননি গার্দিওলা

স্পোর্টস ডেস্ক

কাগজ-কলমে টিকে থাকলেও চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার আশা কার্যত শেষ হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটির। লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া তো দূরে থাক, পরের মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পাবে কিনা, সেটাও অনিশ্চিত পেপ গার্দিওলার দলের। সে অনিশ্চয়তা আরও জেঁকে বসেছে গতকাল শনিবার রাতে ব্রাইটনের বিপক্ষে ২-২ ব্যবধানে ড্রয়ের পর!

ঘরের মাঠ ইতিহাদে আর্লিং হলান্ডের পেনাল্টি গোলে প্রথমে এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। ২১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক ফ্রি-কিকে ব্রাইটনকে সমতায় ফেরান ইকুয়েডরের লেফট ব্যাক পেরভিস এস্তুপিনান। বিরতির ৬ মিনিট আগে বক্সের বাইরে থেকে দূর পাল্লার শটে সিটিকে আরেকদফা এগিয়ে (২-১) দেন ওমর মারমুশ।

তবে লিড ধরে রাখতে পারেনি সিটি। দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে বাজে ডিফেন্ডিংয়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আত্মঘাতী গোল করে বসেন সিটির উজবেকিস্তানের সেন্টারব্যাক আবদুকদির খুশনভ। ম্যাচে আর গোল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ১ পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।

দুই দফা এগিয়ে গিয়েও ড্রয়ের ম্যাচে দুটো অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডে যুক্ত হয়েছে গার্দিওলার নাম। দীর্ঘ ১৭ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম লিগে এক মৌসুমে ৪০ গোল হজম করল তাঁর দল। সেখানেই শেষ নয়, তাঁর অধীনে সর্বনিম্ন পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করতে যাচ্ছে সিটি। শুধু সিটি নয়, এর আগে তাঁর অধীনে কোনো দল এত কম পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করেনি।

গতকালের ড্রতে ২৯ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে আছে সিটি। এরই মধ্যে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে ২২ পয়েন্টের ব্যবধানে (২৯ ম্যাচে ৭০)। ছয়ে থাকা নিউক্যাসলের পয়েন্ট ৪৮। সিটির চেয়ে ১ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা দলটি আবার একটা ম্যাচ কম খেলেছে। তাই পঞ্চম স্থানটাও নড়বড়ে গার্দিওলার দলের। চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পেতে অন্তত প্লে অফ খেলতে চাইলেও পঞ্চম স্থানে থাকতে হবে সিটিজেনদের।

চলতি মৌসুমে লিগে সিটির ম্যাচ বাকি আছে ৯টি। হাতে থাকা সবগুলো ম্যাচ জিতলেও মৌসুম শেষে সিটির পয়েন্ট দাঁড়াবে ৭৫। এর আগে কখনোই এত কম পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করেনি সিটি। স্প্যানিশ এ কোচ বায়ার্ন ছেড়ে যেবার ইংলিশ ক্লাবটির দায়িত্ব নিলেন, সেই ২০১৬-১৭ মৌসুমে লিগে ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করে সিটি। গার্দিওলার অধীনে কোনো ক্লাবের সর্বনিম্ন লিগ পয়েন্ট ছিল সেটাই। এবার সে রেকর্ড নিশ্চিতভাবেই ভাঙতে যাচ্ছে।

২০১৬-১৭ মৌসুমের আরও একটা অপ্রীতিকর রেকর্ড এরইমধ্যে ভেঙেছে গার্দিওলার দল। সেবার ৩৯ গোল হজম করে লিগ মৌসুম শেষ করেছিল সিটি। গার্দিওলার অধীনে লিগে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল হজমের সেটাই ছিল রেকর্ড। এবার মৌসুমের ৯ ম্যাচ বাকি থাকতেই ৪০ গোল হজম করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

গার্দিওলা যেখানে লজ্জার রেকর্ড গড়ছেন, একই ম্যাচে দারুণ একটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন আর্লিং হলান্ড। গতকালের গোলটি ছিল প্রিমিয়ার লিগে হলান্ডের ৮৪তম গোল। এছাড়া লিগে ১৬টি অ্যাসিস্টও আছে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকারের। প্রিমিয়ার লিগে সব মিলিয়ে ১০০ গোলে সরাসরি অবদান হয়ে গেল হলান্ডের।

এ কীর্তি ছুঁতে হলান্ডের লেগেছে মোটে ৯৪ ম্যাচ। নরওয়েজিয়ান গোল মেশিনের চেয়ে দ্রুত এ মাইলফলক ছুঁতে পারেননি আর কেউ। এর আগে ১০০ ম্যাচে ১০০ গোলে অবদানের (৭৯ গোল + ২১ অ্যাসিস্ট) মাইলফলক নিয়ে সবার ওপরে ছিলেন অ্যালান শিয়েরার। গতকাল সাবেক ইংলিশ স্ট্রাইকারকে পেছনে ফেললেন হলান্ড। কিন্তু হলান্ডের মাইলফলক রঙিন হয়নি সিটির ড্র-তে।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৪:৪১:৪২ অপরাহ্ন, রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫
৮১ জন দেখেছেন

এমন লজ্জা আগে কখনো পাননি গার্দিওলা

আপডেট : ০৪:৪১:৪২ অপরাহ্ন, রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫

কাগজ-কলমে টিকে থাকলেও চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার আশা কার্যত শেষ হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটির। লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া তো দূরে থাক, পরের মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পাবে কিনা, সেটাও অনিশ্চিত পেপ গার্দিওলার দলের। সে অনিশ্চয়তা আরও জেঁকে বসেছে গতকাল শনিবার রাতে ব্রাইটনের বিপক্ষে ২-২ ব্যবধানে ড্রয়ের পর!

ঘরের মাঠ ইতিহাদে আর্লিং হলান্ডের পেনাল্টি গোলে প্রথমে এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। ২১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক ফ্রি-কিকে ব্রাইটনকে সমতায় ফেরান ইকুয়েডরের লেফট ব্যাক পেরভিস এস্তুপিনান। বিরতির ৬ মিনিট আগে বক্সের বাইরে থেকে দূর পাল্লার শটে সিটিকে আরেকদফা এগিয়ে (২-১) দেন ওমর মারমুশ।

তবে লিড ধরে রাখতে পারেনি সিটি। দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে বাজে ডিফেন্ডিংয়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আত্মঘাতী গোল করে বসেন সিটির উজবেকিস্তানের সেন্টারব্যাক আবদুকদির খুশনভ। ম্যাচে আর গোল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ১ পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।

দুই দফা এগিয়ে গিয়েও ড্রয়ের ম্যাচে দুটো অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডে যুক্ত হয়েছে গার্দিওলার নাম। দীর্ঘ ১৭ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম লিগে এক মৌসুমে ৪০ গোল হজম করল তাঁর দল। সেখানেই শেষ নয়, তাঁর অধীনে সর্বনিম্ন পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করতে যাচ্ছে সিটি। শুধু সিটি নয়, এর আগে তাঁর অধীনে কোনো দল এত কম পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করেনি।

গতকালের ড্রতে ২৯ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে আছে সিটি। এরই মধ্যে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে ২২ পয়েন্টের ব্যবধানে (২৯ ম্যাচে ৭০)। ছয়ে থাকা নিউক্যাসলের পয়েন্ট ৪৮। সিটির চেয়ে ১ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা দলটি আবার একটা ম্যাচ কম খেলেছে। তাই পঞ্চম স্থানটাও নড়বড়ে গার্দিওলার দলের। চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পেতে অন্তত প্লে অফ খেলতে চাইলেও পঞ্চম স্থানে থাকতে হবে সিটিজেনদের।

চলতি মৌসুমে লিগে সিটির ম্যাচ বাকি আছে ৯টি। হাতে থাকা সবগুলো ম্যাচ জিতলেও মৌসুম শেষে সিটির পয়েন্ট দাঁড়াবে ৭৫। এর আগে কখনোই এত কম পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করেনি সিটি। স্প্যানিশ এ কোচ বায়ার্ন ছেড়ে যেবার ইংলিশ ক্লাবটির দায়িত্ব নিলেন, সেই ২০১৬-১৭ মৌসুমে লিগে ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করে সিটি। গার্দিওলার অধীনে কোনো ক্লাবের সর্বনিম্ন লিগ পয়েন্ট ছিল সেটাই। এবার সে রেকর্ড নিশ্চিতভাবেই ভাঙতে যাচ্ছে।

২০১৬-১৭ মৌসুমের আরও একটা অপ্রীতিকর রেকর্ড এরইমধ্যে ভেঙেছে গার্দিওলার দল। সেবার ৩৯ গোল হজম করে লিগ মৌসুম শেষ করেছিল সিটি। গার্দিওলার অধীনে লিগে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল হজমের সেটাই ছিল রেকর্ড। এবার মৌসুমের ৯ ম্যাচ বাকি থাকতেই ৪০ গোল হজম করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

গার্দিওলা যেখানে লজ্জার রেকর্ড গড়ছেন, একই ম্যাচে দারুণ একটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন আর্লিং হলান্ড। গতকালের গোলটি ছিল প্রিমিয়ার লিগে হলান্ডের ৮৪তম গোল। এছাড়া লিগে ১৬টি অ্যাসিস্টও আছে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকারের। প্রিমিয়ার লিগে সব মিলিয়ে ১০০ গোলে সরাসরি অবদান হয়ে গেল হলান্ডের।

এ কীর্তি ছুঁতে হলান্ডের লেগেছে মোটে ৯৪ ম্যাচ। নরওয়েজিয়ান গোল মেশিনের চেয়ে দ্রুত এ মাইলফলক ছুঁতে পারেননি আর কেউ। এর আগে ১০০ ম্যাচে ১০০ গোলে অবদানের (৭৯ গোল + ২১ অ্যাসিস্ট) মাইলফলক নিয়ে সবার ওপরে ছিলেন অ্যালান শিয়েরার। গতকাল সাবেক ইংলিশ স্ট্রাইকারকে পেছনে ফেললেন হলান্ড। কিন্তু হলান্ডের মাইলফলক রঙিন হয়নি সিটির ড্র-তে।