কলাপাড়ায় উচ্ছেদ আতঙ্কে দরিদ্র সাত পরিবার

২২ বছর অন্যের বাড়িতে আশ্রিত থাকার পরে শ্রমজীবী স্বামী, সন্তান নিয়ে আমিরাবাদ গ্রামের সরকারি আবাসনে ঠাঁই হয়েছে আয়শার। প্রায় আড়াই বছর আগে সেমিপাকা ঘরসহ কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে দুই শতক খাস জমির দলিল সরকারের পক্ষ থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন তারা রয়েছেন উচ্ছেদ আতঙ্কে। রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে তাদের । সরকারি এই আবাসন থেকে উচ্ছেদে গালিগালাজ করা হয়েছে। মারধরের অনবরত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সবশেষ রান্নার চুলা পর্যন্ত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তচনছ করা হয়েছে ঘরের পাশের বেড়া। উপড়ে ফেলা হয়েছে লাউ গাছ। এমনকি চলাচলের রাস্তাটি আটকে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অবরুদ্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বাড়ীর পাসের স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি লালন মোল্লার নেতৃত্বে তার পরিবারের লোকজন দিনদুপুরে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। গত তিন দিন ধরে এমন কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে বলে অসহায় পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ। লালন মোল্লার ভয়ে ওই আাবাসনে আশ্রয় দেওয়া সাত পরিবারের তিনটি পরিবার অন্যত্র সরে থাকছে। বর্তমানে আয়শাসহ চার পরিবার আছেন উচ্ছেদ আতঙ্কে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা মৌজার এক নম্বর খাস খতিয়ানের ২৮৩৪ নম্বর দাগের জমিতে আমিরাবাদ গ্রামে এই শ্রমজীবী দম্পতিসহ মোট সাতটি ভূমিহীন পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়। এদের জমির মালিকানার খতিয়ান খুলে দেওয়া হয়। সরকার দলিলসহ ঘর বুঝিয়ে দিয়েছে প্রায় আড়াই বছর আগে। যেখানে আয়শার খতিয়ান নম্বর ৫৬৮। বর্তমানে এসব দরিদ্র পরিবারের লোকজন চরম নিরাপত্তাহীন অবস্থায় একেকটি মুহূর্ত পার করছেন। তারা লালন মোল্লা গংদের এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে প্রতিকার পাওয়ার জন্য কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ২০২৪ সালে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন । আবারও আজ মঙ্গলবার নতুন করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সবশেষ সরকারের জরুরি পরিসেবা ৯৯৯ এ কল দিয়েছেন বলে জানান আয়শা । কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। বর্তমানে এসব পরিবারের সদস্যরা উচ্ছেদ আতঙ্কে অনিরাপদ অবস্থায় রয়েছেন। চালচুলা ভেঙে ফেলায় চরম দুরাবস্থার রয়েছেন।
অভিযুক্ত লালন মোল্লা জানান, সাতটা পরিবারকে ১৪ শতাংশ জায়গা সরকার দিয়েছে, তারপরও তাদেরকে আমার রেকর্ডীয় জায়গা টিএনও বুঝাইয়া দেছে। আামার জায়গায় চুলা ছিল তাই ভাঙছি। এই জায়গা নিয়ে আদালতে মামলাও আছে বলে জানান লালন মোল্লা।
নীলগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান শহীদ মাতুব্বর জানান, তিনি খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি দেখবেন। সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্হা নেয়া হবে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো রবিউল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিরসনের জন্য ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি সুষ্ঠু ফয়সালা করতে না পারলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাখ//আর