০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোজা রেখেই স্পেনের হয়ে খেলবেন লামিনে ইয়ামাল

স্পোর্টস ডেস্ক

মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বরকতময় মাস রমজান। এই মাসে সিয়াম-সাধনায় নিমজ্জিত থাকেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা। অনেক ধর্মপ্রাণ খেলোয়াড়ও রোজা রেখেই খেলতে নামেন। খেলা চলাকালীন একটু বিরতি নিয়ে ছোট্ট পরিসরে ইফতার করে রোজাও ভাঙেন। স্প্যানিশ বিস্ময়বালক লামিনে ইয়ামাল সেসব রোজাদার খেলোয়াড়দের একজন।

কদিন আগেই বেনফিকার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে রোজা মাঠে নেমেছিলেন ইয়ামাল। বার্সেলোনার এই উদীয়মান তারকা সেদিন দলের জয়ে একটি করে গোল ও অ্যাসিস্ট করেন। ম্যাচের মাঝেই স্বল্প সময়ের বিরতিতে সেরেছিলেন ইফতার। এবার প্রথম কোনো রোজাদার খেলোয়াড় হিসেবে তিনি স্পেন জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামবেন।

উয়েফা নেশনস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বৃহস্পতিবার রাতে নেদারল্যান্ডসের মাঠে খেলবে স্পেন। নিজেদের মাঠে ফিরতি লেগ রোববার রাতে। ম্যাচ দুটিতে স্পেনের প্রথম ফুটবলার হিসেবে রোজা রেখে খেলবেন ইয়ামাল। ম্যাচ দুটিতে সামনে রেখে পরশু স্পেন জাতীয় দলে যোগ দিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনও করেছেন ১৭ বছর বয়সী এই উইঙ্গার।

গত বছর ইয়ামাল স্পেনের হয়ে দুটি ম্যাচ খেললেও রোজা রাখেননি। তবে এবার তার মনে হয়েছে, তিনি রোজা রেখে খেলতে পারবেন। স্প্যানিশ দৈনিক মার্কা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইয়ামাল তার পৈতৃক পরিবারের সম্মানে মুসলিমদের পবিত্র মাসে রোজা পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার জন্ম স্পেনে হলেও তাঁর বাবা মুনির নাসরাউয়ি একজন মরোক্কান মুসলিম।

অবশ্য ইয়ামালই স্পেন জাতীয় দলে খেলা প্রথম মুসলিম ফুটবলার নন। আদামা ত্রাওরে, আনসু ফাতি, মুনির এল হাদ্দাদিরাও ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তবে ত্রাওরে ও ফাতি রমজান মাসে স্পেনের হয়ে কোনো ম্যাচ খেলেননি। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে স্পেনের হয়ে অভিষেক হয় মুনিরের। দেশটির জার্সিতে তিনি ওই এক ম্যাচই খেলেছেন। তবে সেই সময় রমজান মাস ছিল না।

এদিকে স্পেনে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। রমজানে অন্যান্য দেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মতোই তারাও পবিত্রতা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকেন। মুসলমানদের এই মহিমান্বিত মাসের শুরুতেই স্পেনসহ প্রায় প্রতিটি ইউরোপীয় দেশের বড় বড় ক্লাব স্বাগত জানিয়েছিল। ইয়ামালের মতো ফুটবলারদের জন্য খেলার মাঝে রাখা হয় ইফতারের জন্য ছোট বিরতি। যদিও এখনও নেশন্স লিগের ম্যাচে বিরতি থাকবে কি না আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

ডিএজেএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইয়ামাল জানিয়েছেন, রোজা রেখে খেলতে তার কোনো সমস্যা হয় না, ‘মনেই হবে না যে আপনি ক্ষুধার্ত। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শরীরকে পানিশূন্যতা না রাখা। ক্লাবে (বার্সায়) আমি এই বিষয় নিয়ে খুব সতর্ক ছিলাম। (ফজরের) নামাজ পড়ার জন্য আমি ভোর পাঁচটায় উঠি। এরপর ইলেক্ট্রোলাইট জাতীয় পানীয় পান করি, যা সারাদিন সারাদিন আপনার শরীরকে পানিপূর্ণ রাখবে। যখন খাওয়ার (ইফতারের) সময় হয়, আমি চিনি না খাওয়ার চেষ্টা করি। এর পরিবর্তে প্রচুর পানি পান করি। তাই সবকিছুই খুব নিয়ন্ত্রণে থাকে।’

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১১:২৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
৮০ জন দেখেছেন

রোজা রেখেই স্পেনের হয়ে খেলবেন লামিনে ইয়ামাল

আপডেট : ১১:২৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বরকতময় মাস রমজান। এই মাসে সিয়াম-সাধনায় নিমজ্জিত থাকেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা। অনেক ধর্মপ্রাণ খেলোয়াড়ও রোজা রেখেই খেলতে নামেন। খেলা চলাকালীন একটু বিরতি নিয়ে ছোট্ট পরিসরে ইফতার করে রোজাও ভাঙেন। স্প্যানিশ বিস্ময়বালক লামিনে ইয়ামাল সেসব রোজাদার খেলোয়াড়দের একজন।

কদিন আগেই বেনফিকার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে রোজা মাঠে নেমেছিলেন ইয়ামাল। বার্সেলোনার এই উদীয়মান তারকা সেদিন দলের জয়ে একটি করে গোল ও অ্যাসিস্ট করেন। ম্যাচের মাঝেই স্বল্প সময়ের বিরতিতে সেরেছিলেন ইফতার। এবার প্রথম কোনো রোজাদার খেলোয়াড় হিসেবে তিনি স্পেন জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামবেন।

উয়েফা নেশনস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বৃহস্পতিবার রাতে নেদারল্যান্ডসের মাঠে খেলবে স্পেন। নিজেদের মাঠে ফিরতি লেগ রোববার রাতে। ম্যাচ দুটিতে স্পেনের প্রথম ফুটবলার হিসেবে রোজা রেখে খেলবেন ইয়ামাল। ম্যাচ দুটিতে সামনে রেখে পরশু স্পেন জাতীয় দলে যোগ দিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনও করেছেন ১৭ বছর বয়সী এই উইঙ্গার।

গত বছর ইয়ামাল স্পেনের হয়ে দুটি ম্যাচ খেললেও রোজা রাখেননি। তবে এবার তার মনে হয়েছে, তিনি রোজা রেখে খেলতে পারবেন। স্প্যানিশ দৈনিক মার্কা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইয়ামাল তার পৈতৃক পরিবারের সম্মানে মুসলিমদের পবিত্র মাসে রোজা পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার জন্ম স্পেনে হলেও তাঁর বাবা মুনির নাসরাউয়ি একজন মরোক্কান মুসলিম।

অবশ্য ইয়ামালই স্পেন জাতীয় দলে খেলা প্রথম মুসলিম ফুটবলার নন। আদামা ত্রাওরে, আনসু ফাতি, মুনির এল হাদ্দাদিরাও ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তবে ত্রাওরে ও ফাতি রমজান মাসে স্পেনের হয়ে কোনো ম্যাচ খেলেননি। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে স্পেনের হয়ে অভিষেক হয় মুনিরের। দেশটির জার্সিতে তিনি ওই এক ম্যাচই খেলেছেন। তবে সেই সময় রমজান মাস ছিল না।

এদিকে স্পেনে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। রমজানে অন্যান্য দেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মতোই তারাও পবিত্রতা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকেন। মুসলমানদের এই মহিমান্বিত মাসের শুরুতেই স্পেনসহ প্রায় প্রতিটি ইউরোপীয় দেশের বড় বড় ক্লাব স্বাগত জানিয়েছিল। ইয়ামালের মতো ফুটবলারদের জন্য খেলার মাঝে রাখা হয় ইফতারের জন্য ছোট বিরতি। যদিও এখনও নেশন্স লিগের ম্যাচে বিরতি থাকবে কি না আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

ডিএজেএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইয়ামাল জানিয়েছেন, রোজা রেখে খেলতে তার কোনো সমস্যা হয় না, ‘মনেই হবে না যে আপনি ক্ষুধার্ত। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শরীরকে পানিশূন্যতা না রাখা। ক্লাবে (বার্সায়) আমি এই বিষয় নিয়ে খুব সতর্ক ছিলাম। (ফজরের) নামাজ পড়ার জন্য আমি ভোর পাঁচটায় উঠি। এরপর ইলেক্ট্রোলাইট জাতীয় পানীয় পান করি, যা সারাদিন সারাদিন আপনার শরীরকে পানিপূর্ণ রাখবে। যখন খাওয়ার (ইফতারের) সময় হয়, আমি চিনি না খাওয়ার চেষ্টা করি। এর পরিবর্তে প্রচুর পানি পান করি। তাই সবকিছুই খুব নিয়ন্ত্রণে থাকে।’