০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোদাগাড়ীতে ভিজিএফের বিপুল পরিমাণ চাল উদ্ধার, ২ জন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের ভিজিএফের ২ হাজার ৬৩২ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে। উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় থেকে এসব চাল পাচার করা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব চাল জব্দ করেন। চাল পাচারের অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনার পর গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসলাম আলী গা ঢাকা দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে গরীব ও দু:স্থদের মাঝে বিতরণের লক্ষে গোগ্রাম ইউনিয়নের জন্য ২৪ মেট্রিক টন বস্তা চাল বরাদ্দ করা হয়। এই পরিমাণ চাল ২ হাজার ৩৮০ জন দুঃস্থ ও গরীব মানুষের মাঝে বিতরণের কথা ছিল। বুধবার একদফা কিছু চাল বিতরণ করা হয় এবং বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সব চাল বিতরণ দেখানো হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ভ্যানে করে চাল পাচারের সময় এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) ফোন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২ হাজার ৬৩১ কেজি চাল জব্দ করেন।
ইউএনও’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোগ্রাম ইউনিয়নের ধাতমা গ্রামের একটি সড়ক থেকে ২৯ বস্তা, ধাতমা খাড়ি ব্রিজের কাছ থেকে ১৭ বস্তা, গোগ্রাম হাটপাড়ার মুকতাদিরের বাড়ি থেকে ৮ বস্তা ও খাদ্য অধিদপ্তরের সীলমোহরকৃত ৮৫টি খালি বস্তা জব্দ করা হয়। এ সময় চাল পাচারকালে তেরোপাড়া গ্রামের আসাদুল ও উচ্ছড়াকান্দি গ্রামের মাইনুলকে আটক করা হয়।
ইউএনও ফয়সাল আহমেদ জানান, বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাল আটক অভিযান চলে। এই বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের একজন কর্মচারী বাদী হয়ে থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ দিয়েছেন। এটি মামলা হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একেএম মমিনুল হক জানান, পাচার হওয়া চাল ক্রয়ের অভিযোগে দুইজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
স্থানীয়রা জানান, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান কারাগারে গেলে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আসলাম আলীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ঈদ উপলক্ষে দুঃস্থ ও গরীব মানুষদের মাঝে বরাদ্দকৃত বিশেষ ভিজিএফ চালের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। যাদেরকে চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই সচ্ছল ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী। এই চক্রটি চাল তুলে পরিষদেই বিক্রি করে দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম আলীর মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১০:০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
৭৪ জন দেখেছেন

গোদাগাড়ীতে ভিজিএফের বিপুল পরিমাণ চাল উদ্ধার, ২ জন আটক

আপডেট : ১০:০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের ভিজিএফের ২ হাজার ৬৩২ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে। উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় থেকে এসব চাল পাচার করা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব চাল জব্দ করেন। চাল পাচারের অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনার পর গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসলাম আলী গা ঢাকা দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে গরীব ও দু:স্থদের মাঝে বিতরণের লক্ষে গোগ্রাম ইউনিয়নের জন্য ২৪ মেট্রিক টন বস্তা চাল বরাদ্দ করা হয়। এই পরিমাণ চাল ২ হাজার ৩৮০ জন দুঃস্থ ও গরীব মানুষের মাঝে বিতরণের কথা ছিল। বুধবার একদফা কিছু চাল বিতরণ করা হয় এবং বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সব চাল বিতরণ দেখানো হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ভ্যানে করে চাল পাচারের সময় এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) ফোন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২ হাজার ৬৩১ কেজি চাল জব্দ করেন।
ইউএনও’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোগ্রাম ইউনিয়নের ধাতমা গ্রামের একটি সড়ক থেকে ২৯ বস্তা, ধাতমা খাড়ি ব্রিজের কাছ থেকে ১৭ বস্তা, গোগ্রাম হাটপাড়ার মুকতাদিরের বাড়ি থেকে ৮ বস্তা ও খাদ্য অধিদপ্তরের সীলমোহরকৃত ৮৫টি খালি বস্তা জব্দ করা হয়। এ সময় চাল পাচারকালে তেরোপাড়া গ্রামের আসাদুল ও উচ্ছড়াকান্দি গ্রামের মাইনুলকে আটক করা হয়।
ইউএনও ফয়সাল আহমেদ জানান, বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাল আটক অভিযান চলে। এই বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের একজন কর্মচারী বাদী হয়ে থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ দিয়েছেন। এটি মামলা হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একেএম মমিনুল হক জানান, পাচার হওয়া চাল ক্রয়ের অভিযোগে দুইজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
স্থানীয়রা জানান, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান কারাগারে গেলে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আসলাম আলীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ঈদ উপলক্ষে দুঃস্থ ও গরীব মানুষদের মাঝে বরাদ্দকৃত বিশেষ ভিজিএফ চালের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। যাদেরকে চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই সচ্ছল ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী। এই চক্রটি চাল তুলে পরিষদেই বিক্রি করে দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম আলীর মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
বাখ//আর