০২:২০ পূর্বাহ্ন, রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসিনাবিরোধী বিক্ষোভ সম্পর্কে ভারত জানত: জয়শঙ্কর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গত বছরের জুলাই–আগস্টে বাংলাদেশে হওয়া শেখ হাসিনাবিরোধী গণবিক্ষোভের কথা আগে থেকেই ভারত জানত। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে পারেনি দেশটি। গতকাল শনিবার পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির কাছে এসব কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের ব্যাপারে কিছু করার মতো অবস্থায় ভারত ছিল না। কারণ হাসিনার ওপর ভারতের সেই ধরনের ‘প্রভাব’ ছিল না। তাই ওই মুহূর্তে পরামর্শ দেওয়া ছাড়া ভারত কিছুই করতে পারেনি।’

জয়শঙ্কর আরও ইঙ্গিত দেন, অন্য বড় আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর মতো ভারতও বাংলাদেশের ভেতরের অস্থির পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিল। এই প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক মন্তব্য উল্লেখ করেন, যেখানে তুর্ক বলেছিলেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী যদি নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর অভিযান চালায়, তাহলে তাদের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।

দ্য হিন্দু আরও জানিয়েছে, গতকাল পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্যরা জয়শঙ্করের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে সরাসরি আলোচনা করেন, যেখানে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পরিস্থিতিই আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে ওঠে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এ মাসেই চীন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সফরে দুই দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। বিশেষ করে বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন সমঝোতা হতে পারে, যাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে চীনের বিভিন্ন শহরের সংযোগ আরও জোরদার হয়।

বাংলাদেশে ‘বহিরাগত শক্তির’ ভুমিকা রয়েছে বলেও জানান জয়শঙ্কর। এ সময় তিনি বলেন, ‘চীন ভারতের প্রতিপক্ষ নয় বরং প্রতিযোগী।’

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) নিয়েও কথা বলেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের নভেম্বরে সার্কের শেষ বৈঠক হয়েছে। সংস্থাটি এখন সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে এটির পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১২:১৬:৩১ অপরাহ্ন, রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫
৭৭ জন দেখেছেন

হাসিনাবিরোধী বিক্ষোভ সম্পর্কে ভারত জানত: জয়শঙ্কর

আপডেট : ১২:১৬:৩১ অপরাহ্ন, রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫

গত বছরের জুলাই–আগস্টে বাংলাদেশে হওয়া শেখ হাসিনাবিরোধী গণবিক্ষোভের কথা আগে থেকেই ভারত জানত। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে পারেনি দেশটি। গতকাল শনিবার পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির কাছে এসব কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের ব্যাপারে কিছু করার মতো অবস্থায় ভারত ছিল না। কারণ হাসিনার ওপর ভারতের সেই ধরনের ‘প্রভাব’ ছিল না। তাই ওই মুহূর্তে পরামর্শ দেওয়া ছাড়া ভারত কিছুই করতে পারেনি।’

জয়শঙ্কর আরও ইঙ্গিত দেন, অন্য বড় আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর মতো ভারতও বাংলাদেশের ভেতরের অস্থির পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিল। এই প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক মন্তব্য উল্লেখ করেন, যেখানে তুর্ক বলেছিলেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী যদি নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর অভিযান চালায়, তাহলে তাদের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।

দ্য হিন্দু আরও জানিয়েছে, গতকাল পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্যরা জয়শঙ্করের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে সরাসরি আলোচনা করেন, যেখানে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পরিস্থিতিই আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে ওঠে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এ মাসেই চীন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সফরে দুই দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। বিশেষ করে বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন সমঝোতা হতে পারে, যাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে চীনের বিভিন্ন শহরের সংযোগ আরও জোরদার হয়।

বাংলাদেশে ‘বহিরাগত শক্তির’ ভুমিকা রয়েছে বলেও জানান জয়শঙ্কর। এ সময় তিনি বলেন, ‘চীন ভারতের প্রতিপক্ষ নয় বরং প্রতিযোগী।’

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) নিয়েও কথা বলেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের নভেম্বরে সার্কের শেষ বৈঠক হয়েছে। সংস্থাটি এখন সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে এটির পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।