০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এপ্রিলে বাড়বে ডেঙ্গুর প্রকোপ, নেই প্রস্তুতি

অনলাইন ডেস্ক

দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু প্রতি বছরই দেখা যায়, সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হওয়ার পরই অভিযান চালায়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ইতোমধ্যে গরমের সঙ্গে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, যা এডিস মশার বংশবিস্তারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষার আগে থেকেই ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকে। তবে এ বছরও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের কোনো দৃশ্যমান প্রস্তুতি চোখে পড়ছে না।

২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। প্রথমদিকে এটি ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকলেও ২০১৯ সালের পর থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন, আর মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের। গত বছর এপ্রিল থেকেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল। অথচ এবারও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, “ডেঙ্গুর বিস্তারের অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ণ। শুধু স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব নয়, সরকারকে অন্যান্য সংস্থাগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে সচেতনতামূলক কাজে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।”

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীন জানান, “আমরা নিয়মিত কার্যক্রম চালাচ্ছি। যদিও এপ্রিল থেকে ডেঙ্গু বাড়ে, তবে জুন-জুলাইয়ে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়, তাই আমরা সে অনুযায়ী এগোচ্ছি। ঈদের পর থেকে সচেতনতা কার্যক্রম শুরু করব।”

নতুন মশার ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, “আমরা আপাতত আগের ওষুধ দিয়েই কাজ করব। যদি তা কার্যকারিতা হারায়, তাহলে নতুন ওষুধের চিন্তা করব।”

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী ফোন ধরেননি, আর উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষার আগে থেকেই সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু না করলে এ বছরও পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ১১:১৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
১২৭ জন দেখেছেন

এপ্রিলে বাড়বে ডেঙ্গুর প্রকোপ, নেই প্রস্তুতি

আপডেট : ১১:১৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু প্রতি বছরই দেখা যায়, সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হওয়ার পরই অভিযান চালায়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ইতোমধ্যে গরমের সঙ্গে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, যা এডিস মশার বংশবিস্তারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষার আগে থেকেই ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকে। তবে এ বছরও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের কোনো দৃশ্যমান প্রস্তুতি চোখে পড়ছে না।

২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। প্রথমদিকে এটি ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকলেও ২০১৯ সালের পর থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন, আর মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের। গত বছর এপ্রিল থেকেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল। অথচ এবারও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, “ডেঙ্গুর বিস্তারের অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ণ। শুধু স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব নয়, সরকারকে অন্যান্য সংস্থাগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে সচেতনতামূলক কাজে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।”

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীন জানান, “আমরা নিয়মিত কার্যক্রম চালাচ্ছি। যদিও এপ্রিল থেকে ডেঙ্গু বাড়ে, তবে জুন-জুলাইয়ে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়, তাই আমরা সে অনুযায়ী এগোচ্ছি। ঈদের পর থেকে সচেতনতা কার্যক্রম শুরু করব।”

নতুন মশার ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, “আমরা আপাতত আগের ওষুধ দিয়েই কাজ করব। যদি তা কার্যকারিতা হারায়, তাহলে নতুন ওষুধের চিন্তা করব।”

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী ফোন ধরেননি, আর উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষার আগে থেকেই সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু না করলে এ বছরও পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।