১০:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইমরান খানের মুক্তি চেয়ে মার্কিন কংগ্রেসে বিল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর ‘দমনপীড়ন’সহ— মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব রেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ বা কংগ্রেসে এই বিল উত্থাপন করা হয়েছে। ডেমোক্রেট ও ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান– সর্বদলীয় আইনপ্রণেতাদের উদ্যোগে এটি উত্থাপিত হয়েছে।

পাকিস্তান ডেমোক্রেসি অ্যাক্ট’ নামের বিলটি সোমবার কংগ্রেসে উত্থাপন করেন– সাউথ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো উইলসন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান জিমি প্যানেট্টা। উত্থাপনের পর আরও পর্যালোচনার জন্য বিলটি পাঠানো হয়েছে কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক এবং বিচার সংশ্লিষ্ট কমিটিদ্বয়ের কাছে।

মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পদক্ষেপ না নিলে ১৮০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানের আহ্বান রয়েছে প্রস্তাবিত বিলে।

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগনিটস্কি মানবাধিকার জবাবদিহি আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর আওতায়, মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে।

পাকিস্তানে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের সাথে জড়িত প্রধান কুশীলবদের চিহ্নিত করতে এবং তাঁদেরকেও নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে বিলে। তবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যদি রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করে এবং ‘অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত সকল রাজনৈতিক বন্দিকে’ মুক্তি দেয়— তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এসব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে পারবেন।

২০২২ সালে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এক অনাস্থা প্রস্তাব পাস হলে ক্ষমতাচ্যুত হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার। এরপরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ এনে। ২০২৩ সালের আগস্টে তিনি গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তাঁকে রাওয়ালপিন্ডির একটি হাই-সিকিউরিটি আদিয়ালা কারাগারে রাখা হয়েছে।

অনেক পর্যবেক্ষকের মতেই, পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলগুলোর চেয়েও বহুগুণ বেশি ইমরান খানের জনপ্রিয়তা। বিশেষত, দেশটির তরুণ সমাজের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।

পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডনের প্রতিবেদনমতে, যুক্তরাষ্ট্রে ইমরানের দল তেহরিক -ই- ইনসাফ (পিটিআই) দীর্ঘদিন ধরে ইমরান খানের মুক্তির জন্য লবিং করছে। সাম্প্রতিক বিলটি তারই ফসল।

এর আগে ২০২৪ সালের জুনেও একই ধরনের একটি প্রস্তাবনা পাস হয় কংগ্রেসে। এর স্বপক্ষে ৯৮ শতাংশ কংগ্রস সদস্য ভোটও দেন। পাস হওয়া বিলটিতে পাকিস্তানে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে তাগিদ দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু, বাইডেন প্রশাসন তখন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০১:০৫:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
৭৬ জন দেখেছেন

ইমরান খানের মুক্তি চেয়ে মার্কিন কংগ্রেসে বিল

আপডেট : ০১:০৫:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর ‘দমনপীড়ন’সহ— মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব রেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ বা কংগ্রেসে এই বিল উত্থাপন করা হয়েছে। ডেমোক্রেট ও ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান– সর্বদলীয় আইনপ্রণেতাদের উদ্যোগে এটি উত্থাপিত হয়েছে।

পাকিস্তান ডেমোক্রেসি অ্যাক্ট’ নামের বিলটি সোমবার কংগ্রেসে উত্থাপন করেন– সাউথ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো উইলসন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান জিমি প্যানেট্টা। উত্থাপনের পর আরও পর্যালোচনার জন্য বিলটি পাঠানো হয়েছে কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক এবং বিচার সংশ্লিষ্ট কমিটিদ্বয়ের কাছে।

মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পদক্ষেপ না নিলে ১৮০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানের আহ্বান রয়েছে প্রস্তাবিত বিলে।

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগনিটস্কি মানবাধিকার জবাবদিহি আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর আওতায়, মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে।

পাকিস্তানে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের সাথে জড়িত প্রধান কুশীলবদের চিহ্নিত করতে এবং তাঁদেরকেও নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে বিলে। তবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যদি রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করে এবং ‘অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত সকল রাজনৈতিক বন্দিকে’ মুক্তি দেয়— তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এসব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে পারবেন।

২০২২ সালে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এক অনাস্থা প্রস্তাব পাস হলে ক্ষমতাচ্যুত হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার। এরপরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ এনে। ২০২৩ সালের আগস্টে তিনি গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তাঁকে রাওয়ালপিন্ডির একটি হাই-সিকিউরিটি আদিয়ালা কারাগারে রাখা হয়েছে।

অনেক পর্যবেক্ষকের মতেই, পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলগুলোর চেয়েও বহুগুণ বেশি ইমরান খানের জনপ্রিয়তা। বিশেষত, দেশটির তরুণ সমাজের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।

পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডনের প্রতিবেদনমতে, যুক্তরাষ্ট্রে ইমরানের দল তেহরিক -ই- ইনসাফ (পিটিআই) দীর্ঘদিন ধরে ইমরান খানের মুক্তির জন্য লবিং করছে। সাম্প্রতিক বিলটি তারই ফসল।

এর আগে ২০২৪ সালের জুনেও একই ধরনের একটি প্রস্তাবনা পাস হয় কংগ্রেসে। এর স্বপক্ষে ৯৮ শতাংশ কংগ্রস সদস্য ভোটও দেন। পাস হওয়া বিলটিতে পাকিস্তানে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে তাগিদ দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু, বাইডেন প্রশাসন তখন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।