অনৈতিক কাজের সময় হাতেনাতে আটক প্রবাসীর স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিককে নির্যাতন

বরিশালের উজিরপুরে অনৈতিক ও অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে পরকীয়া প্রেমিক সাদ্দাম হোসেন (২৬) ও প্রেমিকা প্রবাসীর স্ত্রীকে (২৮)(সোনিয়া) আটক করে রশি (দড়ি) দিয়ে বৈদ্যুতিক খুটির সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে স্থাণীয় কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের মোড়াকাঠি গ্রামের ফরাজি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃত সাদ্দাম হোসেন গৌরনদী পৌরসভার উত্তর পালরদী এলাকার আকবর হোসেন তালুকদারের ছেলে। নির্যাতনের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উজিরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নির্যাতনের শিকার প্রবাসীর স্ত্রী ও ওই যুবককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে থানার এসআই জতিনময় বাদি হয়ে নির্যাতনের শিকার পরকীয়া প্রেমিক সাদ্দাম হোসেন ও প্রেমিকা প্রবাসীার স্ত্রীকে (সোনিয়া) আসামি করে মঙ্গলবার দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। অপরদিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটানায় পুলিশ থানায় কোন মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অভিযুক্ত যুবক সাদ্দাম হোসেনের বাবা আকবর হোসেন তালুকদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঈদেরদিন প্রবাসী স্ত্রী বাসায় দাওয়াত দিলে মঙ্গলবার সকালে গৌরনদী পৌরসভার উত্তর পালরদী এলাকার সাদ্দাম হোসেন (২৬) মোটর সাইকেল যোগে প্রবাসীর বাড়িতে আসেন। এ সময় ঘরের ভেতর সাদ্দাম হোসেনকে দেখে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশী টুলু সরদার, খলিল ফরাজি, সোহেল ফরাজি, ভাষাই ফরাজিসহ ১৫/২০ জন নারী-পুরুষ ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় অনৈতিক কাজের সময় পরকীয়া প্রেমিক সাদ্দাম হোসেন ও প্রেমিকা প্রবাসীর স্ত্রীকে হাতেনাতে আটক করে তারা। এরপর অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন ও প্রবাসীরকে ঘর থেকে বের করে বাড়ির উঠানের বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে তাদেরকে রশি (দড়ি) দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক নির্য়াতন করে। এ সময় মুঠফোনে নির্যাতনের ঘটনা ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। বিষয়টি স্থানীয় সংবাদকর্মীরা উজিরপুর থানা পুলিশ অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নির্যাতনের শিকার পরকীয়া প্রেমিক সাদ্দাম হোসেন ও প্রেমিকাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেনের বাবা আকবর হোসেন তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, টুলু সরদার নামে একজন আমাকে ফোন করে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তখন আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা রশি দিয়ে আমার ছেলেকে খুটির সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধড়ক শারীরিক নির্যাতন করে ও মোটর সাইকেলটি গুম করে ফেলে। এ ছাড়া পুলিশ আমার মামলা না নিয়ে উল্টো তারা (পুলিশ) বাদি হয়ে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে সাদ্দাম হোসেন ও ওই গৃহবধূকে আসামি করে একটি মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
উজিরপুর থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে পুলিশ দুইজনকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসে একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতার দেখিয়ে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করা হয়। নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিযাতনের অভিযোগ দিতে কেউ থানায় আসেননি বলে ওসি আব্দুস সালাম জানান।
বাখ//আর