০৫:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহিপুরে যুবককে পেটালেন সেনা সদস্য : থানায় অভিযোগ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর মহিপুরে এক সেনা সদস্য হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে জখম করলেন মিশকাত(২৫) নামের এক যুবককে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার(৩১ মার্চ) দুপুরে মহিপুর থানার পুরান মহিপুর এলাকায়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার শেষ বিকেলে আহতর বাবা শাহ আলম ৬ জনকে আসামি করে মহিপুর থানায় ১টি এজাহার দাখিল করেছেন।

ঘটনার বিবরনে জানা গেছে, ১১ বছর আগে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির হলদিবাড়ীয়া গ্রামের মো.শাহ আলমের পুত্র মোহাম্মদ আলামিন (৩০) এর সাথে পুরান মহিপুর এলাকার শহীদ চৌকিদারের কন্যা মোসা: রীনা আক্তার(২৮) এর বিয়ে বিবাহ হয়। তাদের পাঁচ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কয়েক মাস পূর্বে পারিবারিক কলহের জেরে রিনা আক্তার মহিপুর থানায় আলামিনের নামে ১টি যৌতুক মামলা দায়ের করেন। আলামিন ঢাকা একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট কর্মরত থাকায় তার নামে মামলায় যে ওয়ারেন্ট হয়েছে তা সে জানতো না।
এই ঈদে বাড়িতে এসে বন্ধুদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিলে মহিপুর থানা পুলিশ আলামিনকে গ্রেফতার করে। পরে আত্মীয়রা থানায় গেলে পুলিশ কর্মকর্তা তাদেরকে বাদীর সাথে মীমাংসা করে আসতে বলেন।রবিবার সকালে বাবা ভাইসহ ৭জন রীনা আক্তারের বাড়িতে যান। ছেলের বাবা পুরনো সবকিছু ভুলে সামনে যাতে তারা ভালো হয়ে চলতে পারে তার জন্য আহ্বান জানান। কিন্তু মেয়ের বাবা রাজি না হওয়ায় চলে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে মেয়ের ভাই সেনা সদস্য মেহেদী হাসান(২৬) এর নেতৃত্বে ৫ জন পথ আটকায় এবং ছেলের ছোট ভাই মিশকাতকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। তাকে উদ্ধার করতে যে এগিয়ে আসে তাকেই লাঠি দিয়ে আঘাত করে ঐ সেনা কর্মকর্তা। এ সময় আহতর সাথে থাকা মোবাইল, ৩৭ হাজার টাকা, মানিব্যাগ এবং এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যায়।এমনকি ছেলে ধরে নিয়ে যেতে এসেছে বলে পুলিশকে খবর দেয়।মহিপুর থানার পুলিশ এসে আহতকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কলাপাড়া হাসপাতালে পাঠান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিশকাত তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিংহ দেখিয়ে বলেন, এভাবে কোন মানুষ মানুষকে পিটায় না। পুলিশ সময়মত না আসলে ওরা আমাকে মেরেই ফেলত। মিশকাতের বাবা মো.শাহ আলম বলেন, আমি সামনে গেলে আমাকেও আঘাত করে। পরে ছেলেই কান্না সহ্য করতে না পেরে আমি তার উপর শুয়ে পরি। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এর সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত সেনা সদস্য মেহেদী হাসান বলেন, আমার বোন জামাই পরকীয়ায় আসক্ত। যার প্রমাণ নিয়ে আমি একাধিক বার তাদের বাড়িতে গেছি, তাদের আত্মীয়দের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বাধ্য হয়ে আমরা মামলা দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমি যে বাড়ি আছি তারা তা জানতো না। তাই জামায়াত নেতাসহ দলবল নিয়ে আমার ভাগ্নেকে অপহরণ এবং আমার বোনের কাছ থেকে জোর করে মুচলেকা নেয়ার জন্যই এসেছিল। আমি তাদেরকে আপ্যায়ন করেছি। আর তারা যখন যাচ্ছিল তখন আমার বোনকে মিশকাত অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বোনকে মারতে গেলে তখন গ্রামবাসী এবং আমি তাকে উদ্ধার করতে যাই। যার পরিপ্রেক্ষিতেই এই ঘটনা ঘটেছে।
মহিপুর থানার ওসি(তদন্ত) অনিমেষ হালদার বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফোর্স পাঠিয়ে আহতকে উদ্ধার করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাখ//আর

শেয়ার করুন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপডেট : ০৪:১০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫
১৩২ জন দেখেছেন

মহিপুরে যুবককে পেটালেন সেনা সদস্য : থানায় অভিযোগ

আপডেট : ০৪:১০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫

পটুয়াখালীর মহিপুরে এক সেনা সদস্য হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে জখম করলেন মিশকাত(২৫) নামের এক যুবককে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার(৩১ মার্চ) দুপুরে মহিপুর থানার পুরান মহিপুর এলাকায়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার শেষ বিকেলে আহতর বাবা শাহ আলম ৬ জনকে আসামি করে মহিপুর থানায় ১টি এজাহার দাখিল করেছেন।

ঘটনার বিবরনে জানা গেছে, ১১ বছর আগে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউপির হলদিবাড়ীয়া গ্রামের মো.শাহ আলমের পুত্র মোহাম্মদ আলামিন (৩০) এর সাথে পুরান মহিপুর এলাকার শহীদ চৌকিদারের কন্যা মোসা: রীনা আক্তার(২৮) এর বিয়ে বিবাহ হয়। তাদের পাঁচ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কয়েক মাস পূর্বে পারিবারিক কলহের জেরে রিনা আক্তার মহিপুর থানায় আলামিনের নামে ১টি যৌতুক মামলা দায়ের করেন। আলামিন ঢাকা একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট কর্মরত থাকায় তার নামে মামলায় যে ওয়ারেন্ট হয়েছে তা সে জানতো না।
এই ঈদে বাড়িতে এসে বন্ধুদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিলে মহিপুর থানা পুলিশ আলামিনকে গ্রেফতার করে। পরে আত্মীয়রা থানায় গেলে পুলিশ কর্মকর্তা তাদেরকে বাদীর সাথে মীমাংসা করে আসতে বলেন।রবিবার সকালে বাবা ভাইসহ ৭জন রীনা আক্তারের বাড়িতে যান। ছেলের বাবা পুরনো সবকিছু ভুলে সামনে যাতে তারা ভালো হয়ে চলতে পারে তার জন্য আহ্বান জানান। কিন্তু মেয়ের বাবা রাজি না হওয়ায় চলে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে মেয়ের ভাই সেনা সদস্য মেহেদী হাসান(২৬) এর নেতৃত্বে ৫ জন পথ আটকায় এবং ছেলের ছোট ভাই মিশকাতকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। তাকে উদ্ধার করতে যে এগিয়ে আসে তাকেই লাঠি দিয়ে আঘাত করে ঐ সেনা কর্মকর্তা। এ সময় আহতর সাথে থাকা মোবাইল, ৩৭ হাজার টাকা, মানিব্যাগ এবং এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যায়।এমনকি ছেলে ধরে নিয়ে যেতে এসেছে বলে পুলিশকে খবর দেয়।মহিপুর থানার পুলিশ এসে আহতকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কলাপাড়া হাসপাতালে পাঠান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিশকাত তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিংহ দেখিয়ে বলেন, এভাবে কোন মানুষ মানুষকে পিটায় না। পুলিশ সময়মত না আসলে ওরা আমাকে মেরেই ফেলত। মিশকাতের বাবা মো.শাহ আলম বলেন, আমি সামনে গেলে আমাকেও আঘাত করে। পরে ছেলেই কান্না সহ্য করতে না পেরে আমি তার উপর শুয়ে পরি। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এর সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত সেনা সদস্য মেহেদী হাসান বলেন, আমার বোন জামাই পরকীয়ায় আসক্ত। যার প্রমাণ নিয়ে আমি একাধিক বার তাদের বাড়িতে গেছি, তাদের আত্মীয়দের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বাধ্য হয়ে আমরা মামলা দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমি যে বাড়ি আছি তারা তা জানতো না। তাই জামায়াত নেতাসহ দলবল নিয়ে আমার ভাগ্নেকে অপহরণ এবং আমার বোনের কাছ থেকে জোর করে মুচলেকা নেয়ার জন্যই এসেছিল। আমি তাদেরকে আপ্যায়ন করেছি। আর তারা যখন যাচ্ছিল তখন আমার বোনকে মিশকাত অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বোনকে মারতে গেলে তখন গ্রামবাসী এবং আমি তাকে উদ্ধার করতে যাই। যার পরিপ্রেক্ষিতেই এই ঘটনা ঘটেছে।
মহিপুর থানার ওসি(তদন্ত) অনিমেষ হালদার বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফোর্স পাঠিয়ে আহতকে উদ্ধার করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাখ//আর