শ্রীপুরে গার্মেন্টস মালিকের বাড়িতে হামলা, গুলিবর্ষণ

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার আমতৈল গ্রামে প্রতিষ্ঠিত স্টাইলস্মিথ স্যান এ্যাপারেলস্ লিমিটেড এর স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম মিয়া ও হারুক আহম্মেদ হারুকের বাড়িতে সোমবার অর্থ্যাৎ পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সন্ধ্যায় এলাকার লিপ্টন, টিটো ও ইস্কট এর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। ভাংচুর, লুটপাট ও জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় এসময় পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের লাইসেন্সকৃত বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
স্টাইলস্থিথ সান এ্যাপারেলস্ লিমিটেড এর স্বত্বাধিকারী হারুক আহম্মেদ হারুক জানান, তাঁরা প্রত্যেকটি ভাই ঢাকাতে গার্মেন্টসের ব্যবসা করেন এবং নিজ এলাকা শ্রীপুরের আমতৈল গ্রামে বাড়ির পাশেই গড়ে তুলেছেন স্টাইলস্মিথ স্যান এ্যাপারেলস্ লিমিটেড নামে একটি গামেন্টস ফ্যাক্টরী। ঈদ উপলক্ষে বড়ভাই জাহিদুল ইসলাম মিয়া, ফারুজ্জামান মিয়া ও রফিকুল ইসলাম মিয়াসহ ৫’ভাই পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে এসেছেন। ৩১ মার্চ সোমবার অর্থ্যাৎ ঈদের দিন সন্ধ্যায় সকল ভাই মিলে বিশেষ কাজে আমতৈল বাজারে অবস্থান করছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাদের কাছে সংবাদ আসে যে, তাদের বাড়িতে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা করেছে।
এ সংবাদ শোনার পর তাঁরা সবাই বাড়ির পিছন দরজা দিয়ে বাড়ির ভীতরে ঢুকে দেখতে পায় লিপ্টন, টিটো ও ইস্কটের নেতৃত্বে অর্ধশত লোক দেশী অস্ত্র ঢাল, সড়কি, রামদা, ছ্যানদা ও লাঠ-সোঠা নিয়ে বাড়ি-ঘর ব্যাপকহারে ভাংচুর ও লুটপাট করছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এবং জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে তখন তাঁরা তাদের লাইসেন্সকৃত বৈধ অগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত করেন। হারুক আহম্মেদ আরোও বলেন, ওই সময় হামলাকারীরা তাদের সিকিউরিটি গার্ডকে মারধর করে বাড়ির ভীতর প্রবেশ করে এসি,ফার্রিচার,বিল্ডিংয়ের থাই গøাসসহ জানালা দরজা ব্যাপক ভাংচুর করে এবং তাঁর এক আত্মীয়ের গলা থেকে সোনার চেন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। তাদের নিজস্ব আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি না করলে ৪-৫টি দামি গাড়ীও হামলাকারীরা ভেঙে তছনছ করে দিত।
এই ফ্যাক্টরীতে ৪’হাজার থেকে ৫’হাজার শ্রমিক, কর্মচারী কর্ম করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে এবং সরকার এখান থেকে প্রতিবছর মোটা অংকের রাজস্বও পেয়ে থাকেন। গত কয়েকমাস আগেও তাদের বাড়িতে এই সন্ত্রাসীরা হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করেছিল। এখানেই ক্ষ্যান্ত হয়নি সন্ত্রাসীরা তারা মাসে মাসে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে এসে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা নিয়েও থাকে। এছাড়াও প্রতিনিয়তই লোকবল নিয়োগের বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করে থাকে। যদি এমনিভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চলতেই থাকে এবং প্রশাসনিক কোন নিরাপত্তা না পাওয়া যায় তাহলে ফ্যাক্টরী বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না বলেও জানান। তিনি প্রশাসনের কাছে জোর দাবী তুলেছেন, যেসকল সন্ত্রাসীরা এই সমস্ত অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের অবিলম্ভে আটকপূর্বক আইনের আওতায় আনার।
গার্মেন্টস শ্রমিক বদিয়ার রহমান বলেন, তিনি দীর্ঘদিন স্টাইলস্মিথ স্যান এ্যাপারেলস্ লিমিটেডে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। সন্ত্রাসীদের হামলা ও চাঁদাবাজির কারণে যদি এই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আমরা বাধ্য হবো আন্দোলনে যেতে। মালিকদের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং হামলাকারীদের অবিলম্ভে আটকের জন্য প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এ ঘটনায় শ্রীপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ ইদ্রিস আলী জানান, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি রাখা ছাড়াও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী ও মালিকপক্ষের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় অত্র এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
বাখ//আর